সহজ’র মধ্যেই ভূত লুকিয়ে
মোঃ শফিক:
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম মূলহোতা সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাস। তারাসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছেন। কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের প্রায় সব ধরনের ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। মিজান দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ২০০৩ সালে তিনি চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিলের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন। পরে রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ে সিএনএস ডট বিডির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজ ডট কমকে দেওয়া হলে সেখানেও মিজানের চাকরি বহাল থাকে।’তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে মিজানের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই তিনি বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজ ডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজি চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকিট বিক্রি করতেন।’ প্রতারক চক্রটি দৈনিক পাঁচ শতাধিক টিকিট বেচত জানিয়ে র্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে আমরা যতটুকু তথ্য জেনেছি, এই প্রতারক চক্র প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক টিকিট তারা এইভাবে কালোবাজারির মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্নভাবে তারা সংগ্রহ করে তাদের চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে তারা বিক্রি করেন এবং এই চক্রের যারা সদস্য আছেন, কালোবাজারি চক্রের, তারা প্রায় সবাই, কেউ কেউ হয়তো বেশি, প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা তারা এই টিকিট কালোবাজারি বা প্রতারণার মাধ্যমে তারা ইনকাম করে থাকে।’ রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর এবং সবুজবাগ এলাকায় র্যাব-৩ ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় এই চক্রকে।গ্রেপ্তাররা হলেন, ‘ঢালী’ সিন্ডিকেট’র মূলহোতা মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬), মো. সবুর হাওলাদার (৪০) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল পরিমাণ টিকিট, আটটি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রির নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা জব্দ করা হয়।