শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকালে সাংবাদিকদেরকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাও বলছেন তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে। সেজন্য মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে আইসিইউ থেকে তাকে হাসপাতালের কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেই কেবিনটি প্রিজন সেল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।’
কবে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে সে বিষয়ে পরিচালক বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত উন্নতির দিকে। তবে চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড পরবর্তী পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে।’
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঢাকার আদাবর থানায় পোশাকশ্রমিক হত্যার ঘটনার মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে। তবে এটি মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্র আর তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে।’
মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক শিশির চক্রবর্ত্রী বলেন, ‘মূলত শামসুদ্দিনের হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করেছিলেন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’
মেডিক্যাল বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শামসুদ্দিন চৌধুরী হাসপাতালের চারতলায় সার্জারি ওয়ার্ড ৪-এর অধীনে আইসিইউ-২-এ ভর্তি আছেন। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে তার স্কোটাল ইনজুরির (অণ্ডকোষে আঘাত) অস্ত্রোপচার হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, ‘শামসুদ্দিন চৌধুরীর যে অস্ত্রোপচার হয়েছে, সেই আঘাতটি নতুন। এর বাইরে বড় ধরনের জখম তার শরীরে ছিল না।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সহায়তায় আটক করে বিজিবি। শনিবার সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে ওইদিন বিকালে আদালতে হাজির করলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে আদালতে প্রবেশের সময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী ও আইনজীবী শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে বেধড়ক কিলঘুষি মারেন। অনেকে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি জুতাও নিক্ষেপ করেন। কেউ কেউ শামসুদ্দিন চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে কটূক্তিমূলক স্লোগানও দেন এবং লাঞ্ছিত করেন। সেখান থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় অসুস্থ হলে পড়লে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।