ঢাকায় প্রথমবারের মতো ডি-৮ যুব বিষষয়ক মন্ত্রী এবং সিনিয়র অফিসিয়াল পর্যায়ের সভা !
মোঃ আরিফুল ইসলাম :
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে প্রথমবারের মতো ডি-৮ যুব বিষষয়ক মন্ত্রী এবং সিনিয়র অফিসিয়াল পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই দিন ব্যাপী আয়োজিত এ সভায় ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহ তথা বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্কের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। আজ ২১মে সম্মেলনের শেষ দিন সভা শেষে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ও ডি-৮ ইয়ুথ চেয়ার নাজমুল হাসান এমপি।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে এবং এই জনসংখ্যাগত লভ্যাংশের সুযোগ নিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে দেশ ‘রূপকল্প ২০৪১’ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের পথে রয়েছে।
ডি-৮ অঞ্চলে ১.৩ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের বসবাস যার এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ তরুণ। এই অঞ্চলের বিরাট এই জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি অর্জনে তরুণ জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে হবে। তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদেরকে আধুনিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে হবে। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহের যুব মন্ত্রী ও সিনিয়র অফিসিয়ালদের নিয়ে আজ ও গতকাল অর্থাৎ ২০ ও ২১ মে আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ১ম দিনে সচিব মহোদয় এর সভাপতিত্বে ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহের যুবদের সামগ্রিক উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহ থেকে আগত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বিস্তারিত আলোচনা শেষে তারা বেশ কিছু সুপারিশ করেন সেগুলো হল:
• ডি-৮ ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম
• ডি-৮ যুব মন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বার্ষিক সভা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ
• ডি-৮ Youth Council প্রতিষ্ঠা
• ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলির সর্বোত্তম অনুশীলনকে শক্তিশালী করা
• ডি-৮ যুবকদের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ (ওয়েবসাইট ও ডাটাবেইজ তৈরি)
• ডি-৮ যুব উন্নয়ন কৌশল প্রণয়ন
• ডি-৮ যুবকদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
উপরোক্ত সুপারিশগুলি নিয়ে বৈঠকের ২য় দিন আজ আমার সভাপতিত্বে ডি ৮ ভুক্ত সদস্য দেশসমূহ থেকে আগত যুব মন্ত্রীরা আলোচনায় অংশ নেন ।ডি-৮ ভুক্ত অঞ্চলের যু্বদের উন্নয়নে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়গুলি নিয়ে আমরা আরো গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছি। সবশেষে সকল সদস্য রাষ্ট্রের অনুমোদনক্রমে ‘ঢাকা ডিক্লেয়ারেশন অন ইয়ুথ’ গৃহীত হয়েছে যার মধ্যে দিয়ে ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহের যুবদের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি হবে। ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহের যুবদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে এ আয়োজন ও ঢাকা ঘোষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ডি-৮ অঞ্চলের যুবদের উন্নয়নে এ আয়োজন এক অনন্য মাইলফলক। এটি আমাদের যুবদের উন্নত জীবনযাপনের পথ অনুসন্ধানে আলোকবর্তিকা হয়ে কাজ করবে বলে আমি আশা করছি।