করছাড় পেয়েও ব্যবসায়ীরা সুরক্ষা চান: অর্থ উপদেষ্টা
কর, মূসক ফাঁকি দিলে সার্বিক অর্থনীতিতে একটা প্রভাব পড়ে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দাতাসংস্থাগুলো ট্যাক্স, জিডিপি রেশিও কর অব্যাহতি নিয়ে প্রশ্ন করছে। বিদেশের বহু জায়গায় বাংলাদেশে ট্যাক্স রেভিনিউ, সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে বহু প্রশ্ন করা হয়।’
ট্যাক্স রেভিনিউ বাড়ানোকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘নানা কারণে শুল্ক বাড়ানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। কারণ এর প্রভাব সরাসরি জনগণের ওপর পড়ে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিওর যে পরামর্শগুলো আছে সেগুলো মেনে শুল্ক বাড়ানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। আমাদেরর মূল উৎস হচ্ছে মূসক ও আয়কর।’
সরকারের পক্ষে মূসক সংগ্রহে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ আছে, গ্রাহক ভ্যাট দিয়েছেন কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দেননি। এই জায়গায় আমাদের কাজ করার সুযোগ আছে।’
ভ্যাট দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ভ্যাট ফাঁকির প্রবণতা কমাতে প্রয়োজন সচেতনতা।’
মূল প্রবন্ধে মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর আমূল বদলে গেছে রাজস্ব প্রশাসনের চিত্র। রাজনৈতিক চাপমুক্ত হয়ে বড় সংস্কারে পথে হাঁটছে এনবিআর। গত ৫ আগস্টের পর মূসক নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের ৯৪টি নিরীক্ষা শেষ করে ১৫৯ দশমিক ৬৬ কোটি টাকার মূসক ফাঁকি উদঘাটন করেছে। আদায় করেছে ৬১ দশমিক ১৬ কোটি টাকা। ভ্যাট অণুবিভাগ গত ৩ মাসে ৯ হাজার ৮২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন দেয় এবং ভ্যাট আইন ও বিধি সংস্কারে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভ্যাট আদায়ে সঠিক পরিসংখ্যানের অভাব, করদাতার সন্তুষ্টি, কর সংস্কৃতির অভাব, নিম্ন দেশজ উৎপাদনশীলতা ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অটোমেশনের পথে হাঁটছে ভ্যাট বিভাগ।’
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও ছিলেন– অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আব্দুল হক প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআর সদস্য (মূসক নীতি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।