গুমের ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিশন গঠন
২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব গুমের ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে সরকার। কমিশনের প্রধান মনোনীত হয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মাইনুল ইসলাম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই কমিশন গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ দিন সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সই করা আদেশে বলা হয়েছে— সরকার, কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ (অ্যাক্ট নম্বর ভিআই অব ১৯৫৬) এর সেকশন ৩ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনও সংস্থার কোনও সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য নিম্নবর্ণিত ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিশন, অতঃপর ‘কমিশন’ গঠন করলো — (১) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগ সভাপতি (২) বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগ সদস্য (৩) নূর খান, মানবাধিকারকর্মী সদস্য (৪) নাবিলা ইদ্রিস, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সদস্য (৫) সাজ্জাদ হোসেন, মানবাধিকারকর্মী সদস্য।
কমিশনের কার্যপরিধি হবে নিম্নরূপ— যথা- (ক) ২০১০ সালের ১ জানুয়াররি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োাগ ও বলবৎকারী কোনও সংস্থার কোনও সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন তা নির্ধারণ করা; (খ) জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা এবং এ বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা; (গ) জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়- স্বজনকে অবহিত করা; (ঘ) জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনও সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা; এবং (ঙ) ওপরে বর্ণিত উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট যেকোনও কার্য করা।
আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনও ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে।
কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে।