বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে গণস্বাস্থ্যের প্রতীকী শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে গণস্বাস্থ্যের প্রতীকী শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত।

পঙ্​ক্তি ডেস্ক:

৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। এ বছর এই দিবসের প্রতিপাদ্য ” তামাক কোম্পানির কূটকৌশল প্রতিহত করি, শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করি।” এ উপলক্ষে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতাল প্রকল্প ও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের উদ্যোগে. আজ সকাল ১১টায় ধানমণ্ডি ৬ নম্বর রোডে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সামনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও প্রতীকী শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন মূল বক্তব্য রাখেন ও শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। ডা. তালুকদার বলেন, ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন মিলিয়ে দেশেপ্রতি একশ’ জনের প্রায় ৩৫ জন তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত। এটা ২০১৭ সালের গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের রিপোর্ট। ২০১৪ সালে পরিচালিত গ্লোবাল স্কুল-বেজড হেলথ সার্ভে (জিএসএইচএস) অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩-১৫ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯.২ শতাংশ। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার মোট ১১০টি স্কুলের পারিপার্শ্বিক এলাকার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, স্কুলগুলোর ১০০ মিটার মধ্যে অবস্থিত মোট ৫০৭টি মুদি দোকানের ৪৮৭টিতেই অন্যান্য দ্রব্যের সাথে তামাকদ্রব্য প্রদর্শন করতে দেখা গেছে আইনে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও। তামাক কোম্পানির এসব অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। তিনি আরও জানান, ফুসফুসের ক্যান্সারের শতকরা ৮৫-৯০ ভাগ এবং শরীরের সব ক্যান্সারের অর্ধেক ক্যান্সারের জন্য দায়ী তামাক। নিজে ধূমপান না করাই যথেষ্ঠ নয়। পরোক্ষ ধূমপান থেকেও রক্ষা পেতে হবে। ডা. তালুকদার দুঃখ করে বলেন, বাংলাদেশে তামাকবিরোধী আন্দোলনের শুরুর দিকে প্রথিতযশা কয়েকজন চিকিৎসক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ কোষসহ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ অতি নগণ্য। এর ফলে স্বাস্থ্যের উপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে সাধারন মানুষকে ধূমপান ত্যাগ ও এর গ্রহণে বিরত থাকার জন্য জনসচেতনতা কার্যক্রম অবহেলিত হচ্ছে। আমরা তামাকের উপর কর বৃদ্ধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর প্রয়োগ চাই। সাথে স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর যথাযথ গুরুত্ব দেখতে চাই।
এ প্রসঙ্গে তিনি জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার এম এ মালিক, অধ্যাপক এম আর খান প্রমূখ চিকিৎসকের অসামান্য অব্দান স্মরণ করেন। বিশেষ করে গণস্বাস্থ্যের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৭২ সাল থেকে “ধূমপায়ীদের আবেদনের প্রয়োজন নেই” এই শর্তের প্রয়োগ একটি সুদূরপ্রসারী ও কার্যকর দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।
হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও কর্মীগণ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. আকরাম হোসেন, প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম মো: কোরাইশি, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান, হৃদরোগ বিভাগের পরামর্শক ডা। নুরুল হাসান।

Share This